Thursday, March 18, 2010

এরপর আমার সঙ্গে ওর দেখা হয়েছিল আঠাত্তর সালের মাঝামাঝি I কিছুদিন আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে,বলল প্রথম দিকে প্রচন্ড মারধর করেছিল , পরের দিকে গা সওয়া হয়ে গেছিল,ওর মুখে পুলিশী নির্যাতনের কথা শুনে আমি আঁতকে উঠেছিলাম,ও কিন্তু হাসছিল I সেটাই ছিল আমার সঙ্গে সমীর এর শেষ দেখা I
আজ এই দু হাজার নয় সালে আবার সেই সমীর . আমার সামনে বসে , আমায় চিনতে পারছেনা I আমার একটা কার্ড দিলাম ওকে , বললাম কোনো দরকার হলে আমায় ফোন করবেন, কার্ড টা দেখল ও,আমার চোখের দিকে সরাসরি তাকালো, একটু যেন হাসিওর চোখে? বলল-বাসু ?আমি হাঁ বলাতে বলল - আমাকে কি চিনতে পেরেছিস?
বললাম -চিনতে তো প্রথম দেখাতেই পেরেছি , কিন্তু তুই আমাকে চিনতে পারছিস না দেখে কিছু বলিনি I লক্ষ্য করে দেখলাম যে ওর হাতে চারটে আংটি, আমাকে জিগ্গেশ করতে হলো না , ওই বলল - আমি এখন কলকাতার খুব নামী লোকরে বসু, সমীর মুস্তাফি মারা গেছে ,আমি এখন আচার্য্য ভার্গভ I তোর বাঙ্কের পাশের নামী সোনার দোকানটায় বসব সপ্তায় দু দিন , সেই ডিল তাই final করতে এসেছিলাম , টা ওখানে বসলে পাশের ব্যাঙ্কে একটা একাউন্ট তো খুলতেই হয় , কি বলিস ? ডিল final হয়ে গেল , সামনের সপ্তাহ থেকে দু দিন বসব সপ্তাহে I আমি কি বলব বুঝতে পারছিলাম না ,আমার স্বপ্নের নায়ক , এক সময়ের বিখ্যাত নেতা সমীর মুস্তাফি-সে কিনা এখনকার বিখ্যাত জ্যোতিষী আচার্য্য ভার্গভ ?
আমার মনের কথাটা বুঝতে সমীর মুস্তফির বেশি সময় লাগলো না I বলল -খুব একটা তফাত আছে বলে তোর মনে হয় ? দুটোই তো স্বপ্ন বেচা ? সেই সময় আমাদের স্বপ্ন বেচেছিল কএকজন মানুষ ,সেই স্বপ্ন টা আমরা বেচতে পারিনি --আমাদের ব্যর্থতা - কিন্তু এই স্বপ্ন টা কিনতে লোকে সকাল থেকে নাম লেখায় I

টেবিল থেকে গাড়ির চাবি,মোবাইল দুটো তুলে নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে একটু হেসে চলে গেল সমীর মুস্তাফি-না ভুল বললাম --আচার্য্য ভার্গাভ

No comments:

Post a Comment